Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কৃষি ও কৃষকের আলোর দিশারী

মোতাহার হোসেন

গোপালগঞ্জে জন্ম নেয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন মুক্তিকামী,স্বাধীনতাকামী মানুষের এবং সকল প্রকার অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে চির প্রতিবাদ কণ্ঠস্বর। শুধু তাই নয় তিনি ছিলেন,বিশ্বের নিপীড়িত মানুষেরও মুক্তির পথপ্রদর্শক। তিনি মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে বাংলার আনাচে কানাছে ঘুরেছেন, কৃষক, শ্রমিক, চাষাভুসা, কামার কুমার, জেলে, তাঁতিসহ সর্বস্তরের মানুষের সাথে মিশেছেন, তাদের অভাব, অভিযোগ, সমস্যার কথা শুনেছেন, সমাধানে তাদের নিয়েই রাজপথে আন্দোলন করেছেন। ফলে বাংলার কৃষক শ্রমিক, ছাত্র, মজুর সকলের সমস্যা, অভাব তিনি জানতেন। তাই তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতার পর পরই কৃষক, শ্রমিক, মজুর, ছাত্রসহ সকল স্তরের মানুষের কল্যাণে নিয়েছিলেন পৃথক পৃথক কর্মসূচি। তিনি একাদ্বারে কৃষক, শ্রমিক মুজুর, ছাত্র, শিক্ষকের, খেটে খাওয়া মানুষের নেতা। এমন এক মহীরুহ ছিলেন জাতির পিতা ১৯৭৫ সালে আগস্টের ১৫ তারিখ একদল ক্ষমতা লিপ্সু রাতের অন্ধকারে সপরিবারে হত্যা করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে।
তিনি শোষণহীন সমাজ গঠনের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তিনি বাংলার প্রত্যেক মানুষের জীবনের জন্য ন্যূনতম প্রয়োজন আহার, কাপড়, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও কাজের সুযোগ সৃষ্টির জন্য নিজেকে বিসর্জন দিয়েছেন। বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ে তিনি ছিলেন আপসহীন। বিপন্ন জীবনের মুখোমুখি দাঁড়িয়েও তিনি জনগণের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন। এ জন্য সারা জীবন জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন, এমনকি ফাঁসির দড়িও তাঁকে লক্ষ্য থেকে একচুল নড়াতে পারেনি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করলেও বঙ্গবন্ধু বিজয়ীর বেশে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ফিরে আসেন স্বাধীন বাংলাদেশে। ফিরে আসেন তাঁর প্রিয় জনগণের মাঝে। নিজেকে সঁপে দেন দেশ গড়ার কাজে। শুরু হয় জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তিলাভের সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করেছেন এ দেশের শোষিত, বঞ্চিত, অবহেলিত কৃষকদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। তাই তিনি সব সময় কৃষির প্রতি শ্রদ্ধা ও অগ্রাধিকার প্রদান করেছিলেন। দার্শনিক রুশোর একটি উক্তি এখানে প্রাসঙ্গিক, তিনি বলেছিলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও গৌরবমÐিত শিল্প হচ্ছে কৃষি। শতাব্দীর মহানায়ক বঙ্গবন্ধু ছিলেন অত্যন্ত দূরদর্শী ও বিজ্ঞানমনস্ক। চির আধুনিক রাজনৈতিক নেতা। তিনি দার্শনিক রুশোর বাণীকে লালন করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন, অর্থনৈতিকভাবে উন্নত ও সমৃদ্ধ একটি সোনার বাংলা গড়তে কৃষিশিল্পের উন্নয়ন অপরিহার্য। তিনি উপলব্ধি করতেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন হতে না পারলে, মানুষের অন্ন সংস্থান করতে না পারলে সকল অর্জন ব্যর্থ হবে। তিনি বুঝেছিলেন কৃষি একটি জ্ঞাননির্ভর শিল্প। তাই শিক্ষিত জনগৌষ্ঠীকে দেশ গঠনে কৃষি কাজে মনোনিবেশ করার উপর গুরত্ব দিয়েছেলন। কারণ তিনি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন, গতানুগতিক কৃষিব্যবস্থা দ্বারা দ্রæত ক্রমবর্ধমান বাঙালি জাতির খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য চাই কৃষির ব্যাপক আধুনিকীকরণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ। আর কৃষিশিল্পের আধুনিকীকরণ ও লাগসই উন্নয়নের একমাত্র কারিগর হচ্ছেন কৃষি শিক্ষায় শিক্ষিত গ্র্যাজুয়েটরা। এ জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনের ১১ দফায় কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেন। সব প্রতিক‚লতা সত্তে¡ও আত্মমর্যাদাশীল কৃষিবিদরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে দেশের বর্ধিষ্ণু জনগোষ্ঠীর খাদ্য জোগানে নিয়োজিত রয়েছেন। কৃষিবিদদের চিন্তাচেতনা, প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, আধুনিক প্রযুক্তিগত ধারণা ও প্রগতিশীল কর্মকাÐের মাধ্যমে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ উপহার দিতে সক্ষম।
কৃষির সার্বিক উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু যে মমত্ববোধ ও আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন তা ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর প্রদত্ত ভাষণটি একটি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে আজও সাক্ষ্য দেয়। ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি গৌরবময় দিন। বঙ্গবন্ধু শত ব্যস্ততার মধ্যেও কৃষি ও কৃষকের টানে ছুটে এসেছিলেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ শ্যামল আঙিনায়। এ দেশের কৃষি, কৃষক ও কৃষিবিদদের সঙ্গে যে তাঁর আত্মার সম্পর্ক ছিল তা প্রদত্ত ভাষণে তিনি স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি। সবুজ বিপ্লবের কথা আমরা বলছি। যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের যে অবস্থা, সত্য কথা বলতে কী বাংলার মাটি, এ উর্বর জমি বারবার দেশ-বিদেশ থেকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে ও শোষকদের টেনে এনেছে এই বাংলার মাটিতে। এই উর্বর এত সোনার দেশ যদি বাংলাদেশ না হতো, তবে এতকাল আমাদের থাকতে হতো না। যেখানে মধু থাকে, সেখানে মক্ষিকা উড়ে আসে। সোনার বাংলা নাম আজকের সোনার বাংলা নয়। বহু দিনের সোনার বাংলা। বাংলার মাটির মতো মাটি দুনিয়ায় দেখা যায় না। বাংলার মানুষের মতো মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। বাংলার সম্পদের মতো সম্পদ দুনিয়ায় পাওয়া যায় না। তিনি কৃষির গুরুত্ব উপলব্ধি করে বলেন, যেভাবে মানুষ বাড়ছে যদি সেভাবে আমাদের বংশ বৃদ্ধি হতে থাকে, তবে ২০ বছরের মধ্যে বাংলার মানুষ বাংলার মানুষের মাংস খাবে। সে কারণেই আমাদের কৃষির দিকে নজর দিতে হবে এবং কৃষিবিদদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের কোট-প্যান্ট খুলে একটু গ্রামে নামতে হবে। কেমন করে হালে চাষ করতে হয়, এ জমিতে কত ফসল হয়, এ জমিতে কেমন করে লাঙল চষে, কেমন করে বীজ ফলন করতে হয়। আগাছা কখন পরিষ্কার করতে হবে। ধানের কোন সময় নিড়ানি দিতে হয়। কোন সময় আগাছা ফেলতে হয়। পরে ফেললে আমার ধান নষ্ট হয়ে যায়। এগুলো বই পড়লে হবে না। গ্রামে যেয়ে আমার চাষি ভাইদের সঙ্গে প্রাকটিক্যাল কাজ করে শিখতে হবে। তাহলে আপনারা অনেক শিখতে পারবেন। বঙ্গবন্ধু কৃষি ও কৃষক তথা আপামর জনগণের মুক্তির জন্য আজীবন প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। তাঁর প্রদত্ত ভাষণ থেকে তা সহজেই অনুমেয়। তিনি ছিলেন আবহমান বাংলার একজন পথচারী। বংলার মাটির সাধারণ মানুষ। বঙ্গবন্ধুকে নির্মম ভাবে হত্যার মধ্যদিয়ে দেশের স্বাধীনতা,মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির সব পথ রুদ্ধ করে দেয় ঘাতক চক্র। সেই সঙ্গে কৃষের স্বপ্নও ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। বরং সার, বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অলিখিত ভাবে দেশের কৃষকের উপর চালানেরা হয় এক প্রকারের স্টিম রোলার।
এই বৈশ্বিক দুর্যোগে বঙ্গবন্ধুর এবারের শাহাদতবার্ষিকী নতুন রূপে, নতুন আঙ্গিকে বিশেষ করে তাঁর জš§শতবার্র্ষিকীর এই শুভ লগ্নে তাঁকে নতুন করে , নব রূপে আবিষ্কার, তাঁর চেতনায়, তাঁর আদর্শের মশাল ভবিষ্যত প্রজšে§র কাছে পৌঁছে দেয়ার একটি বিরাট সুযোগ। বঙ্গবন্ধুকে, তাঁর প্রতিষ্ঠিত দলকে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ, দুলক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম হানি আর বিপুল বিশাল সম্পদ ক্ষতির স্বীকার করে অর্জিত মহান স্বাধীনতাকে হৃদয়ে ধারণ করে সামনের দিকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন শোষণ মুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়েই মূলত তাঁকে স্মরণ এবং সম্মান দেয়া সম্ভব হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই তাঁকে স্বরণ, অনুকরণ, অনুপ্রেরণাই হবে আজকের প্রজšে§র সামনে শিক্ষণীয়।
বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতি বাংলাদেশের এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় কবির ভাষায় বলা প্রাসঙ্গিক যে, ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত/বঙ্গবন্ধু মরে নাই/যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো/ বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই/তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা/আমরা পেতাম ফিরে জাতির পিতা/যে মানুষ ভীরু কাপুরুষের মতো/ করেনি কো কখনো মাথা নত/এনেছিল হায়েনার ছোবল থেকে/ আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা/কে আছে বাঙালি তার সমতুল্য/ ইতিহাস একদিন দেবে তার মুল্য...।’
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মাশাল এখন বহন করছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে কৃষি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছিলেন। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পুষ্টি উন্নয়ন, মহিলাদের কৃষিতে অংশগ্রহণ ও দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি বছর আবার কৃষি খাতের উন্নয়ন থমকে ছিল। ২০০৮ সালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত শক্তি আবার ক্ষমতায় এলে কৃষি উন্নয়নের ক্ষেত্রে সম্ভাবনার আরো এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। কৃষি খাতে আবার ভর্তুকি, সার বিতরণ ব্যবস্থা, সেচব্যবস্থার উন্নয়ন, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, শস্য বহুমুখীকরণসহ অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বর্তমান সরকার। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ১৯৭২ সালে অর্থাৎ স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে যেখানে খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল প্রায় এক কোটি টন সেখানে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে খাদ্যশস্যের উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি ৩২ লাখ টন। একই সময়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদেরও উৎপাদন কয়েক গুণ বেড়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে এ যুগান্তকারী সাফল্য, বঙ্গবন্ধুর অবদান বাঙালি জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ রাখবে।
বর্তমানে জনসংখ্যার ক্রমাগত বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব, শিল্পায়ন নগরায়ণ, কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার, রাসায়নিক সার ও কল-কারখানার দূষিত বর্জ্যে          কৃষিসম্পদ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য এ দেশের কৃষি, কৃষক, কৃষিবিদ ও কৃষিবান্ধব সরকারের যৌথ উদ্যোগে কাজ করে চলছে। এই দিনে তাঁর বিদেহী আতœার মাগফেরাত কামনা করছি। একই সঙ্গে এ দিনে তাঁর পরিবারের অপরাপর শহীদ সদস্যদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি। য়

সাংবাদিক, সাধারণ সম্পাদক-বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জা জার্নালিস্ট ফোরাম। মোবাইল ০১৮৪১৮১২৭৫ motaherbd123@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon